অলিপর্বার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লেখো | উচ্চ-মাধ্যমিক সংস্কৃত পাঠ্যাংশ বনগতাগুহা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অলিপর্বার চরিত্র বিশ্লষণ করো banagataguha aliparba character

অলিপর্বার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে।

উত্তর- গােবিন্দকৃষ্ণ মোদক তাঁর 'বনগতাগুহা' গদ্যাংশে এক দরিদ্র, শ্রমজীবী, কাষ্ঠচ্ছেদনকারী কাঠুরিয়ার আত্মজীবনী ব্যক্ত করেছেন। সেই সঙ্গে অনুকূল ভাগ্যদেবতার অহৈতুকী কৃপায় তার ভাগ্য পরিবর্তনের ঘটনাও বিবৃত করেছেন। অলিপর্ব-ই গদ্যাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র। গল্পের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অলিপৰ্বার বিশেষ কয়েকটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ করি। 

১. অলিপর্বাকে প্রথমে চরম দারিদ্রের মধ্যে দিয়ে জীবন কাটাতে হয়েছে। সে বাস করত নিঃশ্রীক উটজে। স্ত্রী-পুত্রদের নিয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন করত। না-ছিল আর্থিক সংগতি, না-ছিল উন্নতমানের জীবনযাত্রা। বিলাসব্যসনের তাে গন্ধমাত্র ছিল না। প্রতিদিন তিনটি গর্দভ নিয়ে সে চলে যেত বনে। সেখানে কাষ্ঠ ছেদন করে গাধাগুলির পিঠে সেই কাঠ বােঝাই করে, বাজারে বিক্রয় করে লব্ধ অর্থে কোনােমতে দিনাতিপাত করত।

২. হঠাৎ সে লাভ করল দৈবানুকূল্য। ভাগ্যদেবতা সুপ্রসন্ন হলেন। সেদিন বুঝি ভাগ্যদেবতা তাকে অতুল ধনৈশ্বর্যের অধিকারী করার মানসে তাকে বনে ডেকে নিয়ে গেলেন। কাষ্ঠচ্ছেদন করতে করতে তার নজরে পড়ল আকাশে উড্ডীয়মান রজস্তাম। এখানেই তার সৌভাগ্যের সূচনা। 

৩. তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তার বলে সে অনুমান করল তার দিকে আগমনকারী অশ্বারােহীগণ অবশ্যই দস্যু। কারণ সে পথে রাজপুরুষরা যাতায়াত করে না। সুতরাং বিপদ আসার পূর্বেই সে আত্মরক্ষার স্থান বেছে নিল। এক পল্লবঘন। বৃক্ষে উঠে পাতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখল। এটি তার চরম দূরদর্শিতার নিদর্শন।

৪. বৃক্ষের অন্তরালে থেকে সে চোরগুলির গতিবিধি লক্ষ করতে লাগল। চোরেদের গুহাদ্বার বিবৃত করা এবং সংবৃত। করার মন্ত্রগুলি স্পষ্টভাবে শুনে মনে মনে বারংবার আবৃত্তি করে সে কণ্ঠস্থ করে নিল। এখানে তার প্রখর মেধা এবং প্রখর স্মৃতিশক্তির পরিচয় আমরা পাই।।

৫. বিপদে ধৈর্য ধরার ক্ষমতা তার ছিল। এই সংকট মুহূর্তেও সে বিন্দুমাত্র nervous হয় নি। সে ধৈর্য সহকারে সব লক্ষ করছিল এবং চোরগুলির পলায়নের পরও সে তার পরবর্তী কর্তব্য কর্মের কথা বিবেচনা করছিল। চোরগুলির নাহ সে গাছ থেকে অবতরণ করে নি। সময়ের অপেক্ষায় গাছে বসে রইল। এ ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বলা যায় অলিপর্বা ছিল অতি সতর্ক এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন।

৬. অতঃপর সে গাছ থেকে নেমে গুহাদ্বারে গিয়ে তার কণ্ঠস্থ করা বিবৃতিমন্ত্র পাঠ করার সঙ্গে সঙ্গে গুহাদ্বার। খুলে গেল। সে বিপুল সােনা-দানা বা মণিমাণিক্য দেখে আত্মহারা হয়ে যায় নি। সে ছিল সংযত। সে কৰ্তব্য কর্ম যথাযথভাবে বিচার করে তার গাধাগুলি যে পরিমাণ রত্নাদি নিয়ে যেতে সক্ষম, সেই পরিমাণ সুবর্ণাদি নিয়ে সংবৃতি মন্ত্রে গুহাদ্বার বন্ধ করে দিল।

৭. পরিশেষে তার প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের পরিচয় পাই যখন সে গাধাগুলির পিঠে সুবর্ণাদি বােঝাই করা থলিগুলি চাপিয়ে। সেগুলি কাঠের দ্বারা আচ্ছাদিত করে ঘরে ফিরে এল। থলিগুলি কাঠের দ্বারা আচ্ছাদিত না-করলে হয়ত পথে কোনাে বিপদ ঘটতে পারত।


বিকল্প উত্তর: 

অলিপর্বার চরিত্র বিশ্লষণ করো। -এখনই পড়ুন।

Post a Comment

0 Comments