কৌমুদীর চরিত্র বিশ্লষণ করো | উচ্চ-মাধ্যমিক সংস্কৃত পাঠ্যাংশ বাসন্তিকস্বপ্নম রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Class-XII sanskrit Hs

বাসন্তিকস্বপ্নম অনুসারে কৌমুদীর চরিত্র বর্ণনা করো।

অথবা,

"বাসন্তিকস্বপ্নম" নাট্যাংশ অবলম্বনে কৌমুদির চরিত্র পরিচয় দাও।

উত্তর- পন্ডিত শ্রী কৃষ্ণমাচার্য বিরচিত "বাসন্তিকস্বপ্নম" নাট্যাংশে কৌমুদী একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। নাট্যাংশ অবলম্বনে কৌমুদীর চরিত্রের বিভিন্ন দিক নিম্নলিখিত ভাবে আলোচিত হল।

        নায়িকা- আলোচ্য নাট্যাংশের বেশিরভাগই কৌমুদিকে নিয়ে আবর্তিত হয়েছে । সেদিক দিয়ে কৌমুদিকে আলোচ্য  নাট্যাংশের প্রকৃত নায়িকার আসনে বসানো হয়েছে ।

      বিচারের কেন্দ্রবিন্দু-  রাজা ইন্দ্রবর্মা ও কনকলেখা বসন্তে পরিণয় মহোৎসব নিয়ে ব্যস্ত তার মধ্যেই মঞ্চে উপস্থিত হলেন বৃদ্ধ ইন্দুশর্মা তার মেয়ে কৌমুদীকে নিয়ে। উদ্দেশ্য নিজের মেয়ের বিরূদ্ধে পিতার আদেশ অমান্য করার জন্য রাজার কাছে নালিশ জানানো। ইন্দুশর্মার রেগে যাওয়া, দুঃখে পীড়িত হওয়ার কারন তার স্নেহের কন্যা কৌমুদী।

      অকুতোভয়-  কৌমুদী নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল। প্রাচীনকালে রাজার আদেশ শেষকথা, রাজার বিরুদ্ধাচারন মানেই মৃত্যু। তবুও কৌমুদী নিজের ভালোবাসার পাত্রকে বিয়ে করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ।

    আচরণে শালিনতাবোধ-  রাজা ইন্দ্রবর্মার সাথে কথা বলার সময় পূজনীয় ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মহিপতী, করুণাময়ী মহারাজ বলে সম্বোধন করে কথা বলা শুরু করেছেন কৌমুদী।

    বুদ্ধিমতী-  রাজার প্রতি কথাকে কৌমুদী অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে বুদ্ধির দ্বারা পরাস্ত করেছে । সে রাজাকে বলেছে যদি তার বাবা ইন্দুশর্মা মেয়ের চোখ দিয়ে দেখেন তবে তিনি কন্যার প্রেমিককে ভালোবাসতে বাধ্য। কৌমুদীর কথার দ্বারা নাট্যকার সমোপযোগী ভাবনার প্রকাশ ঘটিয়েছেন ।

     স্বার্থক প্রেমিকা-  কৌমুদীর চরিত্রের সবচেয়ে বড়ো গুন সে আদর্শ প্রেমিকা। সে সারাজীবন চিরকুমারী ব্রত  পালন করতে পারে কিন্তু তার প্রেমিক বসন্তকে ছাড়তে রাজি নয় । কৌমুদীর ভাষায়- 

"...... জীবিমপি ত্যজয়ম্ যাবদয়ুঃ পরিণয়ং বীনা বসেয়ম্ । " 

     -নাট্যকার কৌমুদী চরিত্রের মাধ্যমে সময়োপযোগী এক প্রতিবাদী কন্ঠ এবং আদর্শ প্রেমিকার স্বরূপ ব্যাখ্যা করেছেন ।


বিকল্প উত্তর

উত্তর- আলােচ্য নাট্যাংশে কৌমুদী একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। সে-ই মুখ্য চরিত্র বলা যায়। কৌমুদীর পিতা ইন্দুশর্মা কন্যার জন্য মকরন্দকে পাত্ররূপে নির্বাচন করেছে। এদিকে কৌমুদী বসন্ত নামক অপর এক সুদর্শন যুবককে মন-প্রাণ দান করেছে, অন্তর দিয়ে ভালােবেসেছে। সে পিতৃনির্বাচিত মকরন্দকে কোনাে রকমেই বিবাহ করবে না। নাট্যকার নাটকের শুরুতেই ইন্দুশর্মাকে কোপ-শােকাবিষ্ট বৃদ্ধরূপে উপস্থাপিত করেছেন। তা থেকে সহজেই অনুমান করা যায়। ইন্দুশর্মা কন্যাকে বার বার বুঝিয়েছে এবং তার ওপর শাসন-তর্জন করেছে। কিন্তু কৌমুদী আপন সিদ্ধান্তে অনড়। শেষপর্যন্ত বৃদ্ধ ইন্দুশর্মা রাজার শরণাপন্ন হয়েছে, কৌমুদীর বিরুদ্ধে দেশাচারসম্মত বিচার প্রার্থনা করেছে।

রাজাও কৌমুদীকে পিতার মত অনুবর্তন করার জন্য বার বার উপদেশ দিয়েছেন। সাংবিধানিক আইন অনুসারে কৌমুদীকে মৃত্যুদণ্ডের বা চিরকৌমার্যের ভীতি প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু কৌমুদী সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করেনি। পিতার তর্জন-গর্জন, রাজার মৃত্যুদণ্ডের ভীতি সব কিছুকে উপেক্ষা করে কৌমুদী বসন্তকেই বিবাহ করতে বদ্ধপরিকর। অবশ্য আমাদের পাঠ্যাংশে কৌমুদীর শেষ কী দশা হল তা জানা গেল না; কিন্তু কৌমুদীর মানসিক দৃঢ়তা নাট্যাংশে সম্যক পরিস্ফুট।

কৌমুদীর প্রেম শুদ্ধ পবিত্র। সে প্রেম রাজার উদ্যত দণ্ডকে, পিতার তর্জন-গর্জনকে উপেক্ষা করে। সমাজ ব্যবস্থাকে লঙ্ঘন করার কী ফল তা যে কৌমুদীর জানা ছিল না তা নয়। কিন্তু সত্যিকার প্রেম সমাজের বাঁধন মানে না, মৃত্যুকেও গণ্য করে না, চিরকৌমার্যের ভীতিকেও তুচ্ছ জ্ঞান করে। তার মন-প্রাণ জুড়ে বসে আছে বসন্ত। বসন্তকে সে আপন। প্রেম রাজ্যের অধীশ্বর করেছে। সে দৃপ্ত কণ্ঠে রাজাকে জানিয়েছে—“মহারাজ, বসন্তং বিহায় নান্যং পশ্যেয়ম”। একেই বলে স্বর্গীয় প্রেম। এই প্রেমই শুদ্ধ গঙ্গা জল। নিকষিত হেম। বৃদ্ধ ইন্দুশর্মা কন্যার ওপর নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছে, কিন্তু কন্যার প্রগাঢ় প্রেমের কোনাে মর্যাদা দিতে অনিচ্ছুক। কৌমুদীর এই চারিত্রিক দৃঢ়তা, এই নিখাদ। ভালােবাসা সত্যই পাঠকগণকে বিস্মিত করে। কৌমুদীর প্রেম কত খাঁটি তা তার উক্তি থেকেই বােঝা যায়

“তদর্থং জীবিতমপি ত্যজেয়। যাবদায়ুঃ পরিণয়ং বিনাপি বসেয়ম।”


আরো পড়ুন:

রাজা ইন্দ্রবর্মার চরিত্র বিশ্লষণ করো 

পঁচটি সেরা বেসরকারী স্কলারশিপ

Post a Comment

0 Comments